কিডনি রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার-কিডনি রোগ হলে করণীয় কি

 কিডনি রোগের লক্ষণ-কিডনি রোগের যে কোন স্টেজ এর জন্যই এই সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে হবে। অনেকেই লক্ষণ বসতে না পারার জন্য জানেন না যে তিনি কিডনিজনিত ত্রুটিতে ভুগছেন।কিডনি রোগ সম্পর্কে কিংবা রোগের লক্ষণ সম্পর্কে ভালোভাবে ধারণা থাকলে সেই অনুযায়ী নিরাময়ের ব্যবস্থা নেওয়া সহজ হয়।সুস্থ কিডনি শরীর থেকে বজ্র পদার্থ অতিরিক্ত তরল বের করে দেয়।

কিডনি রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার-কিডনি রোগ হলে করণীয় কি


একই সঙ্গে লাল রক্তকণিকা তৈরি করে আর কি শক্তিশালী করে এবং খনিজ লবণের ভারসাম্য রক্ষা করে।শুল্ক ও ফেটে যাওয়া ত্বক খনিজ ও হাড়ের অসুখের জন্য হতে পারে যা advance কিডনি রোগের সহগামী হিসেবে থাকতে পারে। যখন কিডনি রক্তের পুষ্টি উপাদান খনিজ লবণের  ভারসাম্য ও রক্ষা করতে না পারে।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ। সম্মানিত ভিজিটর বন্ধুরা আশা করছি সবাই ভালো আছেন। বরাবরের মত আমি চলে এসেছি নতুন একটি আর্টিকেল নিয়ে আপনাদের মাঝে।কিডনি রোগ বর্তমানে একটি বহু প্রচলিত রোগ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

অনেকেই অনেক ধরনের কিডনি রোগ জনিত সমস্যায় ভুগছেন কিন্তু এই রোগের লক্ষণ এবং প্রতিকার সম্বন্ধে ধারণা না থাকার কারণে যথাযথ যত্ন নিতে পারছেন না। বন্ধুরা কিডনি রোগের লক্ষণ এবং এর প্রতিকার সম্পর্কে জানাতে আমি আজকে চলে এসেছি একটি আর্টিকেল নিয়ে। এই সম্পর্কে জানতে অবশ্যই শেষ পর্যন্ত আর্টিকেলটি আপনাকে পড়তে হবে।

কিডনি রোগ

আমাদের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ কিডনি। কিডনির প্রতি অযত্ন বা অনিয়মের ফলে জীবন হুমকির মুখে পড়তে পারে। যে কোন বয়সে কিডনি ভালো থাকলে শরীর ভালো থাকবে। আমরা সবাই কমবেশি কিডনি রোগের ভয়াবহতা সম্পর্কে জানি। কিন্তু কিডনির রোগ সম্পর্কে হয়তো অনেকেই সঠিকভাবে জানেন না। যেহেতু সুস্থ জীবনের জন্য কিডনি সুস্থতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেহেতু বিভিন্ন ধরনের কিডনি রোগের কারণ ঝুঁকি এবং কিডনি রোগ থেকে দূরে থাকার উপায় প্রতিরোধ ও চিকিৎসা সম্পর্কে জানা জরুরী।

কিডনি রোগের লক্ষণ

সাধারণত কিডনি রোগের ক্ষেত্রে অনেক রোগীদের ভিন্ন ভিন্ন লক্ষণ দেখা দিতে পারে। কিডনি রোগের একক কোন লক্ষণের কথা নির্দিষ্ট করে বলা যাবে না। কিডনি রোগের সাধারণ লক্ষণগুলো হল-

না।

*নিয়মিত ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।

কিডনি রোগের কারণ

প্রতিবছর দুনিয়া জুড়ে লাখ লাখ মানুষ মারা যায় কিডনি সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে শরীরের গুরুত্বপূর্ণ‌ অঙ্গ হচ্ছে কিডনি। কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা কিভাবে সঠিক যত্ন নিতে হয়। কিভাবে কিডনির ক্ষতি এড়িয়ে দৈনন্দিন জীবনে যাপন করতে হয়। প্রতিদিনের জীবনে আমরা এমন অনেক কিছুই করি যা কিডনির ‌জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে উঠতে পারে। কিডনি রোগের কারণ গুলো নিম্নরুপ-

পর্যাপ্ত পানি পান না করা

প্রতিদিন যেসব কারণে কি দীর্ঘ হতে হয় তার মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ কারণ হলো পর্যাপ্ত পানি পান না করা। কিডনির অন্যতম প্রধান কাজ শরীর থেকে পরিপাক প্রক্রিয়ায় বর্জ্য অপসারণ করা এবং লোহিত রক্তকণিকার ভারসাম্য রক্ষা করা। কিন্তু পর্যাপ্ত পানি পান না করলে বৃক্কের রক্ত প্রবাহ কমে যায়। এর ফলে রক্তে দূষিত রাসায়নিক জমা হতে থাকে।

দীর্ঘক্ষণ প্রস্রাব না করে থাকা

দীর্ঘক্ষণ প্রস্রাব না করে থাকা প্রাত্যহিক সমস্যা গুলোর একটা।বিশেষত পর্যাপ্ত পাবলিক টয়লেটের অভাবে। শহরাঞ্চলের নারীরা এই সমস্যায় বেশি ভোগেন। দীর্ঘক্ষন মুত্রাশয় পূর্ণ করে রাখা শরীরের নানাবিধ জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। পেশির ওপর চাপ থেকে ডাইভাইরাটিকিউলোসিসেরমতো জটিল রোগ সৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দীর্ঘ সময় প্রস্রাব না করে থেকে হাইড্রনেফ্রসিস বা কিডনিতে প্রস্রাবের চাপ বেড়ে যাওয়ার সমস্যা তৈরি হতে পারে। এই সব থেকে কিডনি কার্য ক্ষমতা হারায় এবং ডায়ালাইসিস প্রয়োজনীয় হয়ে পড়ে।

অতিরিক্ত লবণ খাওয়া

বিভিন্ন খাবার-দাবারে মিশে থাকা লবণকে পরিপাক করা কিডনির আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ। রান্না করা বা প্যাকেট খাবারের ব্যবহার করার লবণ আমাদের শরীরে সোডিয়ামের বড় উৎস। কিন্তু পরিপাকের মধ্য দিয়ে এই সোডিয়ামের বেশিরভাগটাই বর্জন হিসেবে শরীর থেকে বের করে দিতে হয়। আমরা যখন বেশি বেশি লবণ খায় তখনই সোডিয়াম প্রক্রিয়াজাত করা নিয়ে কিডনিকে অনেক বেশি ব্যস্ত থাকতে হয়। এতে কিডনির উপর প্রবল চাপ পড়ে।

ক্যাফেইনে বেশি আসক্তি

তৃষ্ণা পেলে আমরা অনেক সময় পানি পান না করে নানা ধরনের কোমল পানীয় পান করি।কিন্তু এইসব পানির মধ্য প্রচুর পরিমাণে ক্যাফেইন মেশানো থাকে। অতিরিক্ত ক্যাফিন শরীরের রক্তচাপ বাড়িয়ে দিতে পারে। অতিরিক্ত রক্তচাপ কিডনির উপর চাপ প্রয়োগ করে এবং এতে কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

ব্যথা নাশকের প্রতি নির্ভরশীলতা

মাথা ব্যথা গলা ব্যথা যাই হোক না কেন‌ কথায় কথায়ব্যথার ওষুধ খাওয়ার বাজে অভ্যাস অনেকেরই আছে। কিন্তু প্রায় সব ব্যথা নাশক ওষুধেরই কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থাকে। কিডনিসহ নানা অঙ্গ প্রত্যঙ্গের জন্য এসব ওষুধ ক্ষতিকর। গবেষণায় দেখা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে নিয়ম থানা ওষুধের উপর নির্ভরতা রক্তচাপ কমিয়ে দেয় এবং কিডনির কার্য ক্ষমতা হ্রাস করে।

বেশি বেশি প্রোটিন খাওয়া

কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়লে লাল মাংস বা গরু-ছাগলের মাংস বেশি খাওয়া ঠিক না। বেশি প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার কিডনির উপর চাপ তৈরি করতে পারে। তবে কিডনির সমস্যা না থাকলে বা চিকিৎসকের নিষেধ না থাকলে এমন প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া যেতে পারে।

অ্যালকোহলের আসক্তি

মদ্যপানের অভ্যাস আছে এমন অনেকেরই অনেক সময় মাত্র জ্ঞান থাকে না। আর খুব বেশি পরিমাণে মদ পান করা কিডনির জন্য খুবই ক্ষতিকর। অ্যালকোহল নানা ধরনের টক্সিন থাকে যেগুলো শরীর থেকে দূর করতে কিডনির‌‌ উঃ

পর অতিরিক্ত চাপ পড়ে যায়। ফলে কিডনি বাঁচাতে হলে অবশ্যই অ্যালকোহল আশক্তি কমাতে হবে।

ধূমপানের শক্তি

যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধকেন্দ্রের অভিমত অনুসারে ধূমপান কিডনি সহ শরীরের সব অঙ্গের জন্যই ক্ষতিকর ।এছাড়া বিভিন্ন গবেষণাতেই ধূমপানের সঙ্গে কিডনি রোগের সম্পর্ক আছে। সুস্থ কিডনি চাইলে ধূমপানের অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে।

সর্দি কাশিকে পাত্তা না দেওয়া

সাধারণ সর্দি-কাশিকে পাত্তা না দেওয়া আমাদের অনেকেরই অভ্যাস। কিন্তু এই সর্দি-কাশি কিডনির জন্য ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে। এছাড়া নানা গবেষণায় দেখা গেছে কিডনির সমস্যায় ভুগছেন এমন অনেকেরই অসুস্থতার সময় ঠিকমতো বিশ্রাম না নেওয়ার ইতিহাস আছে।

রাত জেগে থাকা

রাত জেগে থাকা ঘুমাতে না পারা আমাদের অনেকের নিয়মিত সমস্যা কিন্তু ঘুম শরীরের জন্য নানার কারণে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ঘুমের সময় শরীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ গুলো ঈশ্বর নবায়ন করে ফলে ঘুমাতে না পারার সমস্যাটা নিয়মিত চলতে থাকলে কিডনি সহ‌ শরীরের অন্যান্য অঙ্গ প্রত্যঙ্গগুলো এই কাজ বাধাগ্রস্থ হয়। এতে কিডনির স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা কমে যায়।

কিডনি রোগের চিকিৎসা

কিডনি রোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রে অবশ্যই ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়ে ওষুধ সেবন করা উচিত। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় কিডনি রোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রে নির্মক্ত চিকিৎসা গুলো দেওয়া হয়।

অ্যান্টিবায়োটিক

ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণ অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারে ভালো ফল পাওয়া যায়। তবে ব্যাকটেরিয়ার ধরন নির্ণয়ের রক্ত প্রস্রাব কালচার করার প্রয়োজন হয়।

নেফ্রোস্টমি

এই বিশেষ পদ্ধতিতে চামড়া নিচ দিয়ে একটি ক্যাথেটার কিডনিতে পৌঁছানো হয়। যার মাধ্যমে বিকল্প পথে প্রস্রাব বের হয়ে আসতে পারে।

লিথোট্রিপসি

উৎসব প্রযুক্তির আলট্রাসনিক সক ব্যবহার করে কিডনির পাথরকে ছোট করে বিশেষ ব্যবস্থায় বের করে আনার চিকিৎসা পদ্ধতিকে লিথোট্রীসি বলে।

নেফ্রেকটমি

শল্য চিকিৎসার মাধ্যমে কিডনি অপসারণ কে‌ নেফ্রেকটমি বলা হয়।কিডনিতে ক্যান্সার টিউমার হলে বা কোন কিডনি পুরোপুরি বিকল হয়ে সমস্যার

সৃষ্টি করলে এটি করা হয়ে থাকে।

ডায়ালাইসিস

কৃত্রিম যন্ত্রের মাধ্যমে নির্দিষ্ট সময় পরপর রক্ত পরিশোধন ব্যবস্থা হচ্ছে ডায়ালাইসিস।দেয়ালাইসিস বিভিন্ন রকম হতে পারে যেমন হেমোডায়ালাইসিস পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিস প্রভৃতি। এটি বেশ ব্যয়বহুল একটি চিকিৎসা পদ্ধতি।

কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট

ওকে কিডনি পরিবর্তন করে কোন দাতা‌র কিডনি সংযোজন কে কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট বলে।কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট ব্যয়বহুল এবং এটি করার পর বাকি জীবন নির্দিষ্ট কিছু ঔষধ খেয়ে যেতে হয়।

স্বাস্থ্য একটি অমূল্য সম্পদ এই সম্পদ সংরক্ষণের জন্য ওপরে উল্লেখিত পরামর্শ সমূহ যদি আপনার জীবনের শুরু থেকেই মেনে চলেন তাহলে শুধু কিডনি নয় সকল অসংক্রামক ব্যাধি থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারবেন। কাজেই আসুন সকলে নিয়মগুলো মেনে চলার চেষ্টা করি।  তবে এতে অর্থ ব্যায় হবে সামান্য। তবে যে উপকার পাওয়া যাবে তা অমূল্য।

সচারচর জিজ্ঞাসা

উচ্চ রক্তচাপ  কিডনি রোগের লক্ষণ?

উত্তর: উচ্চ রক্তচাপ কিডনি‌ রোগের একটি অন্যতম লক্ষণ।

কিডনির কাজ কি?

উত্তর: শরীর থেকে অপ্রয়োজনীয় পদার্থ বের করে দেওয়া, রক্ত পরিশোধন, পানিও খনিজ লবনের ভারসাম্য ঠিক রাখা, হরমোন উৎপাদন এসিড এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ প্রভৃতি কিডনির প্রধান কাজ।

কিডনির সবচেয়ে ক্ষুদ্র অংশ কোনটি?

উত্তর: কিডনির সবচেয়ে ক্ষুদ্র অংশ হচ্ছে নেফ্রন।



Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url